আপনি কী ব্রণ নিয়ে চিন্তিত? তাহলে জেনে নিন ব্রণের ঘরোয়া চিকিৎসা .

কেন ব্রণ হয়? যাদের বয়স ১৩ বা তার বেশি তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই সময় উঠতি ছেলে-মেয়েদের শারিরীক কিছু পরিবর্তনের কারনে মুখে ব্রণের প্রকোপ দেখা দেয়। এছাড়া যাদের বেশি ঘাম হয় তখন লোমকূপের গোড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং বাইরের ধূলাবালির সাথে মিশে ফুস্কুরী দেখা দেয়, যেটাকে আমরা ব্রণ বলি।



অনেক ক্ষেত্রে যারা বেশি রাত্রি জাগরন করেন বা কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভোগেন তাদেরও ব্রণ হতে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্হায় এবং জন্মবিরতিকরন পিল সেবনকারীদেরও ব্রণ হতে দেখা যায়। ব্রণ কোন ছোঁয়াচে চর্মরোগ নয়, তাই এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারন নেই। ব্রণ হলে সেটা লালচে, ব্যথাযুক্ত থাকতে পারে অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে পুঁজ হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে কালো দাগ সহ ব্রণ হতে পারে, এটাকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা ব্ল্যাকহেড বলে থাকেন।

ঘরোয়া চিকিৎসা – ব্রণ হলে চিকিৎসকের শরনাপন্ন না হয়ে আমরা ঘরেই বসেই সেটা থেকে মুক্তি পেতে পারি। এজন্য স্হানীয় বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসটি সহজেই ক্রয় করে ব্যবহার করতে পারি।

১) আপেল সিডার ভিনেগার – এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে খুব ভাল কাজ করে। প্রথমেই ব্রণ আক্রান্ত স্হান ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর শুকিয়ে নিতে হবে। এবার ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ও ৩ ভাগ পানি মিশাতে হবে। এবার তুলার ছোট বল এই মিশ্রনে ভিজিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগাতে হবে। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এটা ৩/৪ সপ্তাহ করতে হবে।

২) মধু ও দারুচিনি মিশ্রন – মধু একটি প্রাকৃতিক জীবানুনাশক পদার্থ। দারুচিনির সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে দ্রুত ব্রণ রোধ করা যায়। ব্রণ আক্রান্ত স্হান ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর ২ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ দারুচিনির গুড়ো মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে তা ব্রণে লাগাতে হবে। ১০/১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে এক মাস করা ভাল।

৩) টি ট্রি ওয়েল – বাজারে টি ট্রি ওয়েল ছোট আকারের বোতলে পাওয়া যায়। ১ ভাগ টি ট্রি ওয়েল এবং ৯ ভাগ পানি মিশিয়ে পরিষ্কারকৃত মুখে তুলাতে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্হানে প্রয়োগ করতে হবে। এই পদ্ধতি ৩/৪ সপ্তাহব্যাপি করা যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, এই মিশ্রন দাগ নিরাময়েও কার্যকর।

৪) ইওগার্ট ও মধুর মিশ্রন – ১ টেবিল চামচ ইওগার্ট ও ১ টেবিল চামচ মধুর মিশ্রন ব্রণ আক্রান্ত স্হানে ১০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এর ফলে ত্বক জীবানুমুক্ত থাকবে এবং ব্রণের প্রকোপ কমে আসবে। এই মিশ্রন ব্যবহারে ত্বক হবে কোমল ও দাগমুক্ত। এটি ২/১ মাস ব্যবহার করা যাবে।

৫) এলয় ভেরা – এলয় ভেরা একটি উদ্ভিদের নাম। যেটা অনেকেই বাসায় টবে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য সাজিয়ে রাখেন। এই উদ্ভিদের ভেতরে এক ধরনের আঁঠালো নির্যাস পাওয়া যায় – এই নির্যাস ব্রণের ইনফেকশন রোধ করে এবং দাগ নির্মূলে খুব ভাল ফলাফল দেয়। বর্তমানে বাজারেও এলয় নির্যাস ক্রয় করতে পাওয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যেন কোন ধরনের প্রিজারভেটিভ না থাকে।

সবশেষে খেয়াল রাখতে হবে পরিমিত ঘুম, কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখা, প্রচুর পরিমানে পানি পান এবং রোদ এড়িয়ে চলা – এগুলোর জন্য ব্যত্যয় না ঘটে। তাহলেই আপনার ত্বক থাকবে ঝকঝকে ও কোমল।
Previous
Next Post »